খুরুস্কুলে প্রতীক পেলো জুয়েল এর প্রচেষ্টায় বলছে অনুসারীরা?
এমপি কি তাহলে বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে নামাবে অনুসারীদের?
জাহেদুল ইসলামঃ কক্সবাজারের রামু উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ১১ জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
উক্ত উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। ১২ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি’র সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের মূলতবি সভায় এদের নাম ঘোষনা করেন।
তবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার প্রার্থীদের কেন্দ্র থেকে চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হলেও জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে সদর রামু আসনের উপজেলায় প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে চলছে নানান সমালোচনা।
এসকল সমালোচনার তীর যেন সদর রামু আসনের সাংসদ সদস্যের দিকেই। তৃণমূলে যেসকল মন্তব্য প্রকাশ পায় তাতে অনেকের মতে সদর আসনে প্রতীক বরাদ্দে এম পি,হোঁচট খেয়েছে।
অনেকের মতে এবার উপজেলা নির্বাচনে সদরের এম পি কি বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কাজ করবেন। আবার অনেকে অভিযোগ তুলেছেন এম পি মহোদয় কালো টাকার বিনিময়ে আওয়ামী বিরোধী মতাদর্শের নেতাদের দলীয় নৌকা প্রতীক পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে পড়েছিল।
যেজন্য তিনি আওয়ামী লীগের নিবেদিত যোগ্য প্রার্থীদের কোনঠাসা করে রেখেছিলেন। তবে সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যোগ্যদের প্রাধান্য দিয়ে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন। সুতরাং এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতাকে অবশ্যই আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো উচিত বলে জানান তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।
তৃণমূল কর্মীদের মতে,এই আসনের এম পি, যাদের পক্ষে কেন্দ্রে সুপারিশ করেছিলেন তাদের অনেকেই দলীয় নৌকা প্রতীক বরাদ্দে মনোনীত হয়নি।
তাদের পরিবর্তে জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্র সুপারিশ প্রাপ্তরাই মুলত নৌকা প্রতীকে উক্ত উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার জন্য মনোনীত হয়েছেন।
যেজন্য লোকমুখে সহজেই প্রকাশ পাচ্ছে প্রতীক বরাদ্দে এম পি,র হোঁচট খাওয়ার সংকেত বহন করে।
এবং এম পি, কি তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থীকে জিতিয়ে দিতে কাজ করবেন। তবে এম পি,র হোঁচট খাওয়া হলেও কক্সবাজার জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জোয়েলের প্রচেষ্টায় নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পেলেন সদরের খুরুস্কুল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানের পরিবর্তে সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
এই নেতার অনুসারী হয়ে তারই প্রচেষ্টায় দলীয় প্রতিক বরাদ্দ পাওয়াকে নেতার কৃতিত্ব বলে জানান তারই অনুসারী নেতাকর্মীরা।
এবিষয়ে জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি, নেত্রীর সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে মনোনীত ব্যক্তিকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে জয়ী করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বলে জানান।
অপরদিকে রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে কালো টাকার বিনিময়ে দলীয় নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাইয়ে দিতে তদবির করছেন বলে নানা অভিযোগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল।
এছাড়াও সদর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদক ও কার্যকরী কমিটির নাম ব্যবহার করে এবং ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত ও কালো টাকার মালিক যারা এম পি,র পছন্দের বিতর্কিত ব্যক্তিদের তালিকা প্রেরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এমন অভিযোগে দলীয় সভা নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল করিম মাদু।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার সদর রামু আসনের সংসদ সদস্য জনাব সাইমুম সরওয়ার কমলের ব্যবহুত মোবাইল নাম্বারে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি এছাড়াও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রতিত্তোর দেননি।
সদর এবং রামু উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় প্রতিক নৌকা প্রত্যাশিদের নিয়ে এমন আচরণ সত্যি নিন্দনীয় এবং দলীয় বিরোধিতার সামিল। যা কখনো শোভনীয় হতে পারে না।
আমরা বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনার একচুল পরিমাণও বিরোধিতা আশাকরি না। এমন আচরণ স্বয়ং নেত্রীর বিরোধিতাকে প্রমাণ করে। সর্বোপরি নেত্রীর বিচক্ষণ এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই এবং সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে ইনশাআল্লাহ নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থীরা উক্ত উপজেলা নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবেন এমনটা আশা করছি বলে জানান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, প্রতিটি উপজেলা এবং ইউনিয়নের নেতা কর্মী তথা তৃণমূলের সমন্বয়ে চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণের মাধ্যমে এসকল উপজেলার দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে।
পরিশেষে দলীয় সভা নেত্রীর সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত ভাবে কার্যকর করা হয়েছে। যা সকলের জন্য শোভনীয়। তাই আশাকরি দলীয় প্রধানের এই সিদ্ধান্তে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য আন্তরিক ভাবে ভুমিকা পালন করবে।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত মতে কেউ যদি দলীয় প্রতিকের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে তাহলে তাকে দল থেকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কারের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান।