খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ সপ্তাহ খানেক পরেই সোনা রঙে ভরে উঠবে বোরো ধানের খেত। শুরু হবে ধান কাটার উৎসব। গ্রামে গ্রামে ব্যস্ত হয়ে উঠবেন কৃষাণ-কৃষাণি আর কৃষি শ্রমিকরা। গেল কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর খাগড়াছড়িতে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। তারা বলছেন এ মৌসুমের বোরো ধান যেন তাদের কাছে প্রকৃতির আশীর্বাদ।
তবে খড়া মৌসমে পর্যাপ্ত সেচ ব্যবস্থা, পোকার আক্রমন ও ব্লাষ্ট রোগের কারণে খাগড়াছড়িতে এবার বোরো ধানের প্রত্যাশিত ফলন না পাওয়ার আশাংকা করছে কৃষকরা।
কয়েকদিন আগে দু’দফায় বৃষ্টি হওয়াকে আশীর্বাদ উল্লেখ করে প্রত্যাশিত বোরোর ফলন পাবেন বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
পিকেজি: চলতি বছর খাগড়াছড়ি জেলায় ১১৩৮৭ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এরমধ্যে বোরো হাইব্রিড ৫৬৮৫ হেক্টর এবং উফশী বোরো ৫৭০২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বোরো হাইব্রিড প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪.৭ মেট্ট্রিক টন এবং উফশী বোরো প্রতি হেক্টরে ৩.৮৩ মেট্টিক টন ধরা হয়েছে। কিন্তু পোকা-মাকড়ের আক্রমন ও ব্লাষ্ট রোগের কারণে অনেক ধানের থোড় চিটা হয়ে গেছে।
কৃষকদের অভিযোগ পোকা-মাকড় ও নানা রোগে বোরো ধান আক্রান্ত হলেও কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ না পাওয়ায় বোরো চাষে ব্যাঘাত ঘটেছে। তাছাড়া চলমান খরা ও সেচ সংকটের কারণেও প্রত্যাশিত ফলন না পাবার আশংকা করছেন কৃষকেরা।
বক্সপপ: কৃষক: (১-৪) ধানে পোকা-মাকড়ের পাশাপাশি ব্লাষ্ট রোগের কারণে এবছর ভালো ধান হবেনা। তাছাড়া কৃষি বিভাগের লোকজন প্রয়োজনীয় পরামর্শ না দেওয়ায় আমরা নিজেদের মতো ঔষধ দিয়েছি। অনেক সময় ঔষধ কাজ না করায় ধান চিটা হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুতের কারণে সময় মতো সেচ দিতে না পারায় ধান জলে গেছে। এবছর প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া যাবেনা।
সিংক: হাসিনুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মানিকছড়ি। কৃষকদের অভিযোগ স্বীকার করে তিনি বলেন বিদ্যুত না থাকায়, সময় মতো সেচ দিতে না পারায় এবং ব্লাষ্ট রোগের কারণে প্রত্যাশিত ফলনের চেয়ে ফলন কম হবে বলে মনে করেন তিনি।
সিংকঃ মোঃ মূর্তজ আলী, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খাগড়াছড়ি। তিনি বলেন চলতি বছর বোরো ধান ভালো হয়েছিলো। কিছু কিছু জায়গায় সেচ সংকটের কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। তবে গত কয়েকদিনে দু’দফায় বৃষ্টি হওয়ায় ফলন প্রত্যাশিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন করোনা সংকটের কারণে মুভমেন্ট কম হলেও তার কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের মাঠে যাচ্ছে, পরামর্শ দিচ্ছে। সেচ সংকট দুর করা, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো হলে আরো বেশি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা যাবে।