এজি কায়কোবাদ, গাজীপুরঃ গাজীপুর মহানগরীতে প্রেমিকার সাথে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে চ্যাট করার কারণে ডেকে নিয়ে এক কিশোরকে হত্যার ৬ মাস পর ঘটনার মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার রাতে তাকে লক্ষীপুর জেলার মান্দারীবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ ও র্যাব-১১।
নিহত কিশোরের নাম সিয়াম (২০)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন ছোট দেওড়া এলাকার মোঃ সফিকুল ইসলামের ছোট ছেলে।
গ্রেফতারকৃত মোঃ আরাফাত (২২) গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকার মো. মইনউদ্দিনের ছেলে।
গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে মহানগরীর সদর থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবিথী সাকিনস্থ ফণিরটেক এলাকার নিরিবিলি মাঠের পূর্ব পাশে ধানক্ষেতের কাছে এক কিশোরের লাশ পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। লাশের হাত, পা, গলা, মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা এবং মুখমণ্ডল সহ লাশের সারা শরীরে কাটা রক্তাক্ত জখম ছিল। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলে মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহ দেখে স্বজনেরা পরিচয় শনাক্ত করে। পরে এঘটনায় থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।
র্যাব-১, গাজীপুর স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সেতু (ছদ্মনাম) নামে একটি মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ঘটনার ৫ দিন আগে সেতু গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন ছোট দেওড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ী বেড়াতে যায়। সেখানে তার বান্ধবীর সাথে ঘুরতে গিয়ে নিহত সিয়ামের সাথে পরিচয় হয়। পরে তারা নিজেদের ফেইসবুক আইডি নেওয়া-দেওয়া করে। তারপর তাদের মাঝে ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে বন্ধুসুলভ চ্যাট হয়।
অন্যদিকে, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আসামী আরাফাত তার প্রেমিকা সেতুর ফেইসবুক আইডি তার নিজ মোবাইলে লগ-ইন করে রাখে। ফলে আরাফাত প্রেমিকা সেতু ম্যাসেঞ্জার আইডি দিয়ে সিয়ামের সাথে যে চ্যাট করতো তার বিস্তারিত আরাফাত নিজের মোবাইলে দেখতে পেতো। এতে আরাফাতের মনে চরম ক্ষোভ/আক্রোশ জমতে থাকে এবং সিয়ামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আরাফাত তার প্রেমিকার ম্যাসেঞ্জার আইডি থেকে আরাফাত নিজেই তার পরিচয় গোপন করে নিহত সিয়ামের সাথে চ্যাট করে এবং ঘটনাস্থলে এসে তার সাথে দেখা করতে বলে। সদ্য পরিচয় এবং নিজের ভাললাগা থেকে নিহত সিয়াম একা সেতুর সাথে দেখা করতে যায়।
পরে পূর্ব থেকে প্রস্তুত মুল পরিকল্পনাকারী আরাফাতসহ ১০/১৫ জনের একটি গ্রুপ সিয়ামের হাত পা বেধে এলোপাতাড়িভাবে চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু ও ছেন দিয়ে কোপিয়ে হত্যা করে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন সকালে সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ গেলে সেখানে হত্যাকারীরাও অন্যান্য উৎসুক জনতার সাথে ঘটনাস্থলের সকল কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে।