বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃ ঢাকার মেয়ে “সোহানা আক্তার”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০১৭ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” সোহানা আক্তার”।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন ঢাকার সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।ঢাকার মেয়ে ” সোহানা আক্তার ” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম সোহানা আক্তার। জন্মস্থান ঢাকা এবং বর্তমানে পুরান ঢাকার লালবাগে থাকি।
উদ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো?
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের ২ তারিখ আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু। ছাত্র জীবনের শুরু থেকেই আমার চিন্তা ছিল আমি চাকরি দিব, নিবো না। আর এই চিন্তা থেকেই আমার পথচলা।
আপনি এই অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
অনলাইন বিজনেস সে আইডল হিসেবে আসলে তেমন কেউ নেই কিন্তু আমি প্রথম থেকে সব সময় সব উদ্যোক্তা থেকে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করছি ।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
গত সারে তিন বছরে কতটুকু সফলতা অর্জন করেছি সেটা আমার জানা নেই কিন্তু আমি অনেক অনেক আপুদের ভালোবাসা,শ্রদ্ধা পেয়েছি আমার আজকের এই বর্তমান অবস্থানের জন্য আমার মা-বাবা ও আমার কাছের কিছু শুভাকাঙ্খির অবদান অনেক। তারাই সব সময় আমাকে প্রেরণা দিয়েছে এবং আমার আজকে যতখানি সফল তার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো আমি আমার কাস্টমারকে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দিয়েছি। কাস্টমারের সন্তুষ্টি নিয়ে কাজ করেছি। কাস্টমারের সাথে প্রোডাক্ট সম্পর্কে মিথ্যা বলিনি এবং তাদের বিশ্বাস সব সময় ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এবং আমাকে আরো এগিয়ে যেতে হবে।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
বর্তমানে আমাদের কোন শো-রুম নেই ।আমরা অনলাইনের উপর নির্ভর করেই আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। ইনশাহআল্লাহ আল্লাহ চাইলে সবার সাপোর্ট পেলে খুব আমরা শোরুম দিব ঢাকায় একটা। অনেকগুলো পথ পাড়ি দিয়ে আজকের বর্তমানে এই অবস্থানে আসতে পেরেছি । কিন্তু এখনো আরো অনেক পথ বাকি আছে ভবিষ্যতে আরও সফলতা অর্জন করার জন্য। আমার দ্বারা জানো মানুষের উপকার হয় এবং সামনে আরও উদ্যোক্তারা আসবে অনেক কিছু শিখতে পারে সেই চেষ্টাই আমি করব।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা বলুন?
আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং অনার্স ও মাস্টার্স ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর আন্ডারে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের উপর সম্পন্ন করেছি।কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কম্পিউটারের উপর কোর্স করেছি, তাছাড়া গতবছর করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণ করেছি।
আপনার চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
এই পর্যন্ত চলাটা খুব যে সহজ ছিল তা কিন্তু না ।বাধার সম্মুখীন হয়েছি কিন্তু কথায় আছে না ‘নিয়তের উপর বরকত’। আমার সাথে ও তাই হয়েছে বাবা-মার দোয়া ও আল্লাহর ইচ্ছা আর আমার শ্রমেরফলেই আমি সকল বাধা পার করেছি, আলহামদুলিল্লাহ ।চলার পথে মন্দ লোকের মন্দ কথা , কটাক্ষ করা ও নিরুৎসাহিত করা ও বিভিন্ন বাঁধা আমি শুধু একটা জিনিস চিন্তা করেই পার করেছি আর সেইটা হলো যারা এসব বলে তারা আপনার পিছনে থেকেই বলবে তাই তারা আপনার পিছনে থাকবে তাদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে নিজের সামনে চলার কেন নষ্ট করব।
আপনার নতুন প্রোডাক্ট গুলো কি কি?
আমি বর্তমানে জুয়েলারি আইটেম গুলোতেই বেশি ফোকাস করছি দেশি-বিদেশি জুয়েলারি । আমার পেইজের দ্বারা আমি ৫০ এর বেশি জেলাতে এবং বিদেশে আমাদের পণ্য পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ। সামনের জুয়েলারির পাশাপাশি আমি ব্যাগ অথবা আরো বিভিন্ন এক্সেসরিজ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব যেনো প্রতিটা কাস্টমার তার চাহিদা অনুযায়ী আমাদের থেকেই তারপর পণ্যটি পেয়ে যায়।
বর্তমানে কভিড১৯ এ ই-কমার্স?
করোণা একটি মরণব্যাধি ভাইরাস।যেটা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।যার ফলে নিজের সেইফটি মেইনটেইন করে কাজ করে যেতে হচ্ছে।কিন্তু দিন দিন অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে, তাই নিজেকে সেইফ রেখে কাস্টমারের সেফটি মেইনটেইন করে কাজ সম্পন্ন করতে হচ্ছে।ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে গেলে আমরা আরও সুন্দরভাবে হবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
পরিশেষে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?
ব্যবসায়ী /উদ্যোক্তা হতে চাইলে সবার আগে সৎ থাকতে হবে। সৎ থাকার পাশাপাশি ধৈর্য্য ধরে পরিশ্রম করার মন মানসিকতা থাকা লাগবে তাহলে সফলতা আসবে।আর নতুন যারা বিশেষ করে তরুণরা যারা ব্যবসা করতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো শ্রম আর ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকেন সফলতা আসবেই। আর কাস্টমারকে সব সময় শ্বশুরবাড়ি মানুষের মতো আপ্যায়ন করবেন, সে আপনার পেইজ ভিজিট করে যেন প্রোডাক্ট না কিনতে পারলেও আপনার ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে পুনরায় ফিরে আসে।