জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল কলেজ প্রাঙ্গণে করার ইচ্ছে পোষণ করায় কিছু জামায়াত বিএনপি পন্থী শিক্ষকের রোষাণলে পড়েছেন চট্টগ্রাম এনায়াত বাজার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন তালুকদার। যদিও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কলেজের অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে গুণগত শিক্ষাবান্ধব কলেজ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন প্রায় ২২ বছর ধরে সুনামের সাথে নিজেকে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত রেখেছেন। তাঁর দক্ষতা ও কর্মস্পৃহা দেখে কলেজ পরিচালনা কমিটি তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেন। তিনি শুধু শিক্ষার পরিবেশ ও মানোন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় তিনি অনিয়মিত শিক্ষকদের নিয়মিতও করেছেন।
জানা যায়, অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন
কলেজ প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল করার ইচ্ছে পোষণের ব্যাপারে জানার পর থেকে জামায়াত-বিএনপি পন্থী কিছু শিক্ষকের রোষানলে পড়েছেন এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তাকে সরানোর জন্য কোন উপায়ন্ত না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। অভিযোগে জ্যেষ্ঠ পাঁচ শিক্ষককে বাদ দিয়ে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া ৬ মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম থাকলে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাঁর নিয়োগ প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালনা কমিটির এক চিঠি উল্লেখ করেন, জ্যেষ্ঠ পাঁচ শিক্ষকের বিভিন্ন সমস্যা ও কেউ কেউ অনিয়মিত। যা একটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সবকিছু বিবেচনা করতে হয়। সবদিক বিবেচনা করে সোহানা শরমিন তালুকদার যোগ্য। ছয় মাস অতিক্রম হওয়ার পর অধ্যক্ষের জন্য তিনি পেপার বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন। তবে অধ্যক্ষ নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। পরিচয় গোপন রেখে প্রথমে কলেজ পরিদর্শনে কথা হয় কলেজের শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর সাথে। শিক্ষক ও কর্মচারীদের মতে, তিনি (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) প্রথমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারন ও লালন করেন। তাঁর আগে যিনি ছিলেন তিনি চিহ্নিত বিএনপি নেতার আত্বীয়। তিনি যাওয়ার পর তাকে কলেজ পরামর্শক হিসেবে রাখেন। তবে পরামর্শক হিসেবে কলেজে কোন পদবী নেই। কলেজের নিজস্ব ফান্ড থেকে মাসে ৭৫ হাজার টাকা তাকে দেওযা হতো। তাঁর প্রয়োজন না থাকতে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সরিয়ে নেন। এইটিও অন্যতম কারণ। যে সকল শিক্ষক নিয়মিত কলেজে আসতেন না তাঁদের নিয়মিত আসার জন্য কঠোর হলেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে সোহানা শরমিন তালুকদার দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষার মান ও পরিবেশ আগের চেয়ে আরো উন্নত হয়েছে। আরেকটি সূত্রে জানা গেল, শিক্ষার্থীদের দুইজন পুরুষ শিক্ষক বিভিন্নভাবে ডিসটার্ব করতেন। যা শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন তালুকদার দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই শিক্ষকদের মৌখিকভাবে নোটিশ করেছেন। এইটাও অন্যতম কারণ। কেন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিলেন এবং তাদের কেন নোটিশ করলেন। এইটি আরো কাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন তালুকদার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, ভাই কমিটি আমাকে দায়িত্ব দিচ্ছে এক মুহূর্ত আগেও জানিনা। নিয়মিত অধ্যক্ষের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিই। অধ্যক্ষ নিয়োগ পেলে আমিতো থাকবোনা। আর আমি জোর করে বা কোন মাধ্যম দিয়ে দায়িত্ব নিই নায়। কমিটি আমার উপর আস্থা রেখে দায়িত্ব যখন দিয়েছেন। তা হলে দায়িত্বের অবহেলা করতে পারবনা। দায়িত্ব যথাযথ পালন ও কলেজের উন্নয়ন এবং শিক্ষার পরিবেশসহ বঙ্গবন্ধুর মুরাল করার চিন্তাভাবনা করাতে কতিপয় আমার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। তবে কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের এইসব হুমকি ধামকিতে আমাকে নাড়াতে পারবেনা।