1. admin@bbcnews24.news : admin :
মাদকের বহু মামলার আসামি মহারানী টিকটক মনিকার খুঁটির জোর কোথায় - BBC NEWS 24
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ভালুকায় দিনব্যাপী প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলার উদ্ধোধন ইসলামপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ উদ্বোধন শেরপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত শেরপুরে কুড়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদকের উপর হামলা চট্টগ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু নিখোঁজ, ফিরে পেতে মায়ের আকুতি ত্রিশালে জিলানী হত্যা মামলার দুই আসামী গ্রেপ্তার পটিয়ায় বিচার চলাকালীন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ ভালুকায় ফিসারির পাড় মেরামত করা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত- ১ ত্রিশালে জিলানী হত্যাকারীদের  গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ভালুকায় প্রাইভেটকারের ভিতরে ধর্ষণের ঘটনায় বিএনপি নেতার ছেলে গ্রেফতার

মাদকের বহু মামলার আসামি মহারানী টিকটক মনিকার খুঁটির জোর কোথায়

বিবিসি নিউজ ২৪ ডেস্ক
  • সময় : বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৫২ বার পঠিত

কে এম রাজীব : বর্তমানে মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স। প্রতিনিয়তে মাদক সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক করেছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আইনের ফাঁকফোকড়ে বেড়িয়ে এসে আবার মাদক ব্যবসায় জড়িত হচ্ছে ওসব মাদক ব্যবসায়ী। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এসব কর্মকান্ড, ফলে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ ও শিক্ষার্থীরা । কোনো ভাবে থামানো কিংবা নির্মুল করা যাচ্ছে না সমাজ ধ্বংসকারী মাদক ব্যবসায়ীদের। কত শত মাদক ব্যবসায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা খেলেও আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অধরা থেকে যায় অনেকে। তেমনি অধরা থেকে বীরদর্পে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন, আরেফিন নগরের কেন্দ্রীয় বিশ্ব কবরস্থান এলাকার ডজনেরও বেশি মাদক মামলার আসামি মাহামুদা আক্তার মনিকা প্রঃ টিকটিক মনিকা। যার ফলে মাদক ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন আরেফিন নগর। এ স্বর্গরাজ্যে নির্মুলে যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার বরাবরে চিঠি দিয়েছেন আরেফিন নগর এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাহামুদা আক্তার মনিকা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপির) বায়েজিদ থানার তালিকা ভুক্ত এবং আরেফিন নগর এলাকার মাদক পরিবারের একজন
চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে বহু বছর ধরে ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। যার এক নামে পরিচয় মাদক রানী টিকটক মনিকা। তার স্বামী মোঃ বাহার উদ্দিন রকি ও একজন তালিকা ভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। বাহার উদ্দিন রকি মনিকার দ্বিতীয় স্বামী। বাহার উদ্দিন রকি সে নিজেকে একজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিছন্ন কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও তার মূল ব্যবসা ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজার ব্যবসা। এ ব্যবসার মূল পরিচালক মাহমুদা আক্তার মনিকা। এই দম্পতির রয়েছে বিশাল বাহিনী। যে বাহিনীতে সম্পৃক্ত অসাধু কিছু পুলিশ সদস্য, তার লালিত কিছু সাংবাদিক, এলাকার কিছু নেতা ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানা ও আদালতে সহ রয়েছে একেক জনের ডজন খানেক মামলা। তাদের রয়েছে মিনি পতিতালয়। এসবে তারা অসাধু পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিদের, এলাকার নেতা ও কিশোর গ্যাংদের মাসোয়ারা দিয়ে নিরাপদে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে তার বাহিনী। এসবে এলাকায় তাদের কেউ বাঁধা দিলে তাদের উপর চলে নির্যাতন। চলতি বছরের নভেম্বরে মনিকার বোন মুক্তা, বিলকিস, পারভিন ও শিল্পী নামের এসব মহিলারা মনিকাকে এসব কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করলে মনিকা তার বাহিনী দিয়ে তাদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মুক্তা নামের ওই মহিলাকে গুরুতর আহত করে এবং তার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে বলে অভিযোগে জানা যায়। এতে সে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মাদক মামলা, অস্ত্র মামলা সহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেয় এবং তার লালিত সাংবাদিক পরিচয়ের ব্যক্তিদের দিয়ে মনিকা প্রতিনিয়তে হয়রানি ও চাঁদা দাবী করে আসছেন বলেও জানা যায়। পরবর্তীতে মুক্তা নামের ওই নারী গত ৭ নভেম্বর মনিকা, বাহার উদ্দিন রকি, মোঃ সালাউদ্দিন, মোঃ হাসান ও মোঃ জাহিদ নামের পাঁচজনকে আসামি করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রট আদালত -২ চট্টগ্রামে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং- ১৮৯২/২২। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগ ও মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, মনিকার রয়েছে বায়েজিদ থানায় মাদকের মামলা নং- ১৪, ১৯, ৩৪/২৮৩, ০৮/৬৩, ১৮/৩৩৬, ৩/২৯৯, ২৯/৯১, ৩২/৩৮৭, ২৯/২৮৭, ১৮/৪১২, ১৭/২৩৪ ও ২০/৪১৬ নং সহ ১২টি মামলা। তবুও মনিকার মন দূর্বল করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। মাদক সহ পুলিশ তাদের আটক করলেও বেশিদিন তাদের জেল হাজতে থাকতে হয় না। কারণ মনিকার সাথে সাংবাদিক পরিচয়দানকারীরা ও এলাকার রাজনৈতিক
পরিচয়দানকারীদের সাথে মনিকার সখ্যতা থাকার কারণে তদবিরের মাধ্যমে তাদের মুক্ত করে আনা হয়।
এদের দিয়ে মনিকা অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা ও চাঁদা আদায় করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। যারা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়, যারা এই বাহিনীর অবাধ্য, তাদের এ সাংবাদিক দ্বারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানী মূলক সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করানো হয় বলেও অভিযোগে জানা যায়। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তারা আগে গোপনে মাদক বিক্রি করলেও এখন প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে মনিকা। স্থানীয় ক্রেতার পাশাপাশি এসব জায়গায় মাদক কিনতে আসেন বহিরাগতরাও। এরা রাস্তা ও গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে ইভ টিজিংও করে স্কুলগামীদের। তারা আরও বলেন, মাদকের বিস্তারের কারণে উঠতি বয়সী ছেলেদের নিয়ে বেশি চিন্তায় থাকতে হয়। ব্যবসায়ীদের টার্গেট তো তরুণরাই।‘কারা ব্যবসা করে সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কিছু বলতে পারি না। বললে আমরা তাঁদের টার্গেট হই। তখন দেখা যাবে, আমাদের উপর উৎপাত শুরু হয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, মনিকার এতো মামলা থাকা সত্বেও, প্রতি আটকে হাজতে থাকার পরও, বেড়িয়ে এসে আইনের তোয়াক্কা না করে, বাইক চালিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাদক বিক্রি করে। কোথায় বহু মামলার আসামি মহারানী টিকটক মনিকার খুঁটির জোর।

এবিষয়ে জানতে মনিকার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে আপনি সরাসরি আমার এলাকায় আসেন, না হয় আমার পক্ষে আপনাকে কিছু জানানো সম্ভব হবেনা। এখন ফোন রাখেন। অন্যদিকে বায়েজিদ ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু বলেন, ওই এলাকাটাই পুরোটাই মাদকের আস্তানা। ওই এলাকাটা নিয়ন্ত্রণ করে মনিকা এবং তার স্বামী বাহার উদ্দিন রকি। মনিকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অনেক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য যাদের মাধ্যমে সে মাদক বিক্রি করে। আর তার স্বামী রকি তো একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং সে হত্যা মামলার আসামি। তাদের ১৫/২০ টা মামলা এগুলো কোনো বিষয় না। রকি সিটি কর্পোরেশনের পরিছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করতো। কাজ করার সুযোগে তারা সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখল করে ওখানে ঘর বেঁধে ওই ঘর থেকে তারা মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে। তারা মাদকের বিশাল পরিবার। শাহেদ ইকবাল বাবু আরও বলেন, তারা সিটি কর্পোরেশনের যে জায়গাটি দখল করে মাদক ব্যবসা করছে, আমি এবিষয়ে ওখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করতে মেয়র মহোদয়কে জানিয়েছি এবং উচ্ছেদের বিষয়টি পক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান শাহেদ ইকবাল বাবু।

যেহেতু মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স, সেহেতু ওই এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে এক কর্মকর্তা বলেন, তথ্য থাকলেও কৌশলের দিক দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারিনা। কারণ তাদের রয়েছে বিশাল বাহিনী। রাস্তা থেকে শুরু করে তাদের বাসা পর্যন্ত তাদের লোকজন পাহারাদার হিসেবে কাজ করে। আমরা অনেকবার অভিযান চালিয়েছি এবং কয়েক জনকে আমরা আটক করে মামলা দিয়ে জেল হাজতেও পাঠিয়েছি। কিন্তু বুঝে উঠতে পারিনা তারা কি ভাবে অতি অল্প সময়ে জামিনে বেড়িয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, মনিকার পরিবারের অনেকে মাদক ব্যবসায় জড়িত। আমি এ মাসে ৪ বার অভিযান চালিয়ে ৬ টা মামলা দিয়েছি। তবে ভাই জায়গাটা বড় বেকায়দার জায়গা। আমরা অভিযানে গেলে তারা কেমনে খবর পাইয়া যায় এবং মাল গুলো লুকাইয়া ফেলে, যার ফলে তাদের হাতে নাতে ধরতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। এখন শুনছি তারা নাকি সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে ব্যবসা করে। তবে আমি মনে করি, যেহেতু জায়গাটা সরকারি, সেহেতু উধ্বর্তন কর্মকর্তারা যদি এদের এ এলাকা থেকে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করেন তাহলে এ মাদক পরিবার ধ্বংস হবে বলে মনে করি। তবে মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এবিষয়ে পুলিশ বলছে, মাদকের এই হোতাদের ধরতে, এ এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ বিবিসি নিউজ ২৪
Theme Customized BY Shakil IT Park